স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে দোকান-পাট খোলা রাখার দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ী ও দোকান শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে চকবাজারে ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাদের সঙ্গে নগরের কাঠপট্টি, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, গীর্জামহল্লা এলাকার ব্যবসায়ীরাও যুক্ত হন। এ সময় তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে দোকান-পাট খোলা রাখার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এর কিছু সময় পরে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। যে মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে গিয়ে তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘিরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং দোকান-পাট খোলার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারী ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের সঙ্গে সিটি ও মহসিন মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও একমত পোষণ করেছেন। তারা বলেন, আমরা সব মানতে রাজি আছি, শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। গতবছর লকডাউনে অনেক দেনা হয়েছি, ঋণের কারণে অনেকে ব্যবসাও ছেড়ে গেছেন। আমরাও ঋণে জর্জরিত হয়ে আছি। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকলে আমাদের পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নেই। সাধারণ ব্যবসায়ীরা না খেয়ে মারা যাবেন। দোকানপাট খোলা থাকলে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, রোগ যাতে না ছড়ায় সেভাবে নিজেরাও সতর্ক থাকবো, কাস্টমারদের জন্যও সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় তাদের মধ্যে কেউ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা আবার কেউ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা আবার কেউ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দোকান-পাট খোলা রাখার দাবি জানান। এদিকে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ। ব্যবসায়ীদের দাবি শুনে তিনি এ বিষয়ে লিখিত পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে ব্যবসায়ীরা লিখিত দেওয়ার মতপোষণ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করেন। এদিকে বরিশালে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বাস ও লঞ্চ চলাচল করছেনা বা নামি বিপনিবিতানগুলো বন্ধ থাকলেও নগরের চক বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ চুপিসারে দোকান খুলে বিকিকিনি করছেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত হলে চকবাজারের কতিপয় দোকানি জড়ো হয়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা বলেন, সরকার নির্দেশিত লকডাউন যথাযথভাবে কার্যকর করতে তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। যাতে করে করোনার অতিমারি থেকে মানুষ মুক্তি পেতে পারেন। যেখানে এর ব্যতয় ঘটছে সেখানেই তারা জরিমানা করছেন।
Leave a Reply